হিন্দু ক্যালেন্ডারে প্রতি মাসে কৃষ্ণ পক্ষ ও শুক্ল পক্ষে দুটি একাদশী ব্রত পালিত হয়। ফাল্গুন মাসের শুক্ল পক্ষের একাদশী তিথি আমলকী একাদশী বা রঙ্গভরী একাদশী নামে পরিচিত। ৩ মার্চ অর্থাৎ আজ আমলকী বা রঙ্গভরী একাদশী পালিত হবে। হিন্দু ধর্মে সমস্ত একাদশীকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হলেও, আমলকী একাদশীকে সর্বোচ্চ স্থান প্রদান করা হয়েছে। এই একাদশীতে বিষ্ণু ও আমলকী গাছের পুজো করা হয়। আমলকী গাছ বিষ্ণুর অত্য়ন্ত প্রিয়।
আমলকীর মাহাত্ম্
পৌরাণিক ধারণা অনুযায়ী বিষ্ণুর মাধ্যমেই আমলকী গাছের উৎপত্তি। এই গাছের একটি অংশে দেবতার বাস। আমলকী একাদশীর দিনে আমলকী গাছের তলায় বসে বিষ্ণুর পুজো করলে নারায়ণ অত্যন্ত প্রসন্ন হন। মনে করা হয় আমলকী গাছের তলায় বসে নারায়ণের আরাধনা করলে হাজার গোরু দানের সমান পুণ্য অর্জন করা যায়।
আমলকী একাদশী ব্রতকথা
পৌরাণিক কালে বৈদিশ নামক এক নগর ছিল। সেই নগরে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্রের বাস ছিল। সেখানে বসবাসকারী প্রত্যেকে বিষ্ণু ভক্ত ছিলেন। সেই নগরের রাজা ছিলেন চৈতরথ। তিনি বিদ্বান ও ধার্মিত ছিলেন। তাঁর নগরে কোনও ব্যক্তি দরিদ্র ছিল না। বৈদিশে বসবাসকারী প্রত্যেকে একাদশী ব্রত পালন করত।
একদা ফাল্গুন মাসের আমলকী একাদশীতে প্রত্যেকে উপবাস করেন এবং মন্দিরে গিয়ে পুজো ও রাত্রি জাগরণ করেন। তখনই রাতেবেলা সেখানে এক ঘোর পাপী শিকারী আসে। ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত ছিল সেই শিকারী। তাই মন্দিরের এক কোণায় বসে সে জাগরণ দেখতে থাকে এবং বিষ্ণু ও আমলকী একাদশীর মাহাত্ম্য শোনে। এ ভাবে পুরো রাত কেটে যায়। নগরবাসীর সঙ্গে সেই শিকারীও জেগে রাত কাটায়। সকালে প্রত্যেকে নজের বাড়ি চলে যান। শিকারী বাড়ি গিয়ে খাবার খায়। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তাঁর মৃত্যু হয়।