ওঁ কালী কালী মহাকালী কালীকে পাপহারিণী / ধর্মার্থ মোক্ষদে দেবী নারায়ণী নমোস্তুতে।
প্রতি বছর এর ন্যায়, দীপান্বিতা অমাবস্যায় আমাদের আশ্রমে শ্রী শ্রী কালী মাতার তারা মায়ের রুপে পুজা ও দর্শন।
কালীপুজা : অন্ধকারের আলো
‘শক্তি’ গতিশীল, গতিশীলতাই হলো শক্তির প্রতীক এবং, পুরুষ ‘স্থির শক্তি’-র প্রতীক। তাই, ঐশ্বরিক কালী মায়ের রূপটি সহজভাবে এই বার্তা দেয় যে, যখন স্থির শক্তি গতিশীল শক্তির সাথে মিলিত হয় বা স্থির শক্তি গতিশীলতা প্রাপ্ত হয়, তখন জগতের প্রকাশ ঘটে বা সৃষ্টি হয়। এই বিশ্বের কোনো কিছুই ধ্রুব সত্য না, সমস্ত কিছুই গতিশীল বা পরিবর্তনশীল।
কালীপুজা, বাংলার একটি অতি প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। কার্তিক মাসের অমাবস্যায় এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন দেবী কালীকে পূজা করা হয়। কালী, শক্তির প্রতীক, মহাবিশ্বের অসীম শক্তির রূপ। তিনি সৃষ্টি ও ধ্বংসের সামর্থ্য রাখেন।
কালীপুজার রীতিনীতি ও মন্ত্র:
- প্রস্তুতি: পূজার আগে ঘর পরিষ্কার করা হয়। মন্দির সাজানো হয় ফুল, ধূপ, এবং প্রদীপ দিয়ে।
- আহ্বান: মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে দেবী কালীকে আহ্বান করা হয়। একটি প্রচলিত মন্ত্র হল “ওম অ্যাঁ হ্রীং ক্লীং চামুণ্ডায়ে বিচ্ছে”।
- প্রসাদ: দেবীকে প্রসাদ অর্পণ করা হয়। এতে মাংসাহারী খাবার থাকতে পারে।
- ফুল: লাল হিবিস্কাস ফুল দেবীকে অর্পণ করা হয়।
- ধূপ ও প্রদীপ: পবিত্র পরিবেশ তৈরির জন্য ধূপ ও প্রদীপ জ্বালানো হয়।
- মধ্যরাতের পূজা: মধ্যরাতে বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় দেবী সবচেয়ে সক্রিয় থাকেন বলে বিশ্বাস।
- প্রসাদ বিতরণ: পূজার পর প্রসাদ বিতরণ করা হয়।
কালীপুজার তাৎপর্য:
কালীপুজার রাতে বিশেষভাবে পূজা করা হয়। ভক্তরা রাত জেগে পূজা করেন এবং কালী দেবীর কাছে প্রার্থনা করেন। তারা বিশ্বাস করেন যে এই রাতে কালী দেবী বিশেষভাবে কৃপা বর্ষণ করেন।
কালীপুজা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি ভয়, নেতিবাচক শক্তি, এবং জীবনের বাধা দূর করার জন্য দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনার সময়।
কালীপুজার মাধ্যমে ভক্তরা দেবী কালীর সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগসূত্র স্থাপন করেন এবং তাঁর রূপান্তরকারী শক্তির অনুভূতি লাভ করেন ।