কৌশিকী অমাবস্যা ৯ই ভাদ্র শুক্রবার (26.08.2022) দুপুর ১২ টা থেকে ১০ই ভাদ্র শনিবার (27.08.2022) দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকবে ।।
মহা-কৌশিকী অমাবস্যার তাৎপর্য্য
সৃষ্টি-স্থিতি-প্রলয়কারীনি মা তারা “কৌশিকী” রূপে এই দিব্য তিথিতেই অশুভের প্রতীক শুম্ভ ও নিশুম্ভকে বধ করেছিলেন।
১৮৬৪ সালে, মাত্র ২৬ বছরের যুবক অবস্থায় এই দিব্য কৌশিকী অমাবস্যাতেই শ্রী শ্রী বামদেব পরমসিদ্ধি লাভ করেন – মহাপীঠ তারাপীঠ এর মহাশ্মশানেই।
কৌশিকী অমাবস্যা, অন্য সব অমাবস্যার থেকে একটু আলাদা কারণ তন্ত্র মতে ও শাস্ত্র মতে ভাদ্র মাসের এই তিথি টি একটু বিশেষ কারণ অনেক কঠিন ও গুহ্য সাধনা আজকের দিনে করলে আশাতীত ফল মেলে। বৌদ্ধ ও হিন্দু তন্ত্রে এই দিনের এক বিশেষ গুরুত্ব আছে। সাধক নিজের ইচ্ছা মতো ধনাত্মক অথবা ঋণাত্মক শক্তি নিজের সাধনার মধ্যে আত্মস্থ করে, ও সিদ্ধি লাভ করতে পারেন।
চন্ডী তে বর্ণিত মহা সরস্বতী দেবীর কাহিনী তে বলা আছে, পুরাকালে একবার শুম্ভ ও নিশুম্ভ কঠিন সাধনা করে ব্রহ্মা কে তুষ্ট করলে চতুরানন তাদের বর প্রদান করেন কোনো পুরুষ তাদের বধ করতে পারবে না, শুধু কোনো অ-যোনি সম্ভূত নারী তাদের বধ করতে পারবে অর্থাৎ এমন এক নারী যে কোনো মাতৃ গর্ভ থেকে উৎপন্ন হয়নি তার হাতেই এই দুই অসুর ভাই এর মৃত্যু হবে, আর পৃথিবীতে এমন নারী কোথায়, এমনকি আদ্যা শক্তি মহামায়া মেনকা রানীর গর্ভে জন্ম নিয়েছেন তাই তিনিও ওদের নাশ করতে পারবেন না,তবে কি উপায়?
পূর্ব জন্মে পার্বতী যখন সতী রূপে দক্ষ যজ্ঞ স্থলে আত্মাহুতি দেন তার কারণে এই জন্মে ওনার গাত্র বর্ণ কালো মেঘের মতো তাই ভোলা নাথ আদর করে তাকে কালিকা ডাকতেন, একদিন দানব ভাই দের দ্বারা পীড়িত দেবতারা যখন ক্লান্ত কৈলাশ এ আশ্রয় নিলেন, শিব সব দেবতাদের সামনেই পার্বতীকে বললেন “কালিকা তুমি ওদের উদ্ধার করো ” সবার সামনে কালী বলে ডাকাতে পার্বতী অত্যন্ত ক্ষুব্ধ,অপমানিত ও ক্রোধিত মনে মানস সরোবর এর ধারে কঠিন তপস্যা করলেন ও তপস্যান্তে শীতল মানস সরোবর এর জলে স্নান করে নিজের দেহের সব কালো কোশিকা পরিত্যাগ করলেন ও পূর্নিমার চাঁদের মতো গাত্র বর্ণ ধারণ করলেন ও ওই কালো কোশিকা গুলি থেকে এক অপূর্ব সুন্দর কৃষ্ণবর্ণ দেবীর সৃষ্টি হয় ইনি দেবী কৌশিকী, আজ সেই তিথি যেদিন এই দেবীর উৎপত্তি হয় ও শুম্ভ ও নিশুম্ভ কে বধ করেন, তাই এই অমাবস্যার নাম কৌশিকী অমাবস্যা। পশ্চিমবঙ্গের বীরভুম জেলায় অবস্থিত তারাপীঠ এ আজ এই উপলক্ষ্যে বিশাল উৎসব হয়, তারা দেবী কে বৌদ্ধ ধর্মের অন্তর্গত বজ্রযান এ নীলসরস্বতী ও বলা হয়। লোকে বিশ্বাস করে এই তিথিতে ভাত খেতে নেই।